Mahira Pry Health Care is Education related websites. All About Education related blog my websites.

Translate

Breaking

বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪

এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা | Entamoeba histolytica in bengali





এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা (Entamoeba histolytica)

 

এটি মানুষের অস্ত্রে বসবাসকারী, আমাশায় রোগ সৃষ্টিকারী,

 

অ্যামিবা-সদৃশ এক অন্তঃপরজীবী প্রাণী। এই পরজীবী

 

মানুষের বৃহদন্ত্রের মিউকাস ও সাব-মিউকাস স্তরের কলা

 

 দ্রবীভূত ও বিদীর্ণ করে ওই স্থানের শ্লেষ্মা কোশ ও কলা

 

খাদ্যরূপে গ্রহণ করে ও ক্ষত বা আলসার সৃষ্টি করে।

 

কলা বা টিস্যু (tissue) দ্রবীভূত করে সেটির অভ্যন্তরে

 

বাস করে বলে এই পরজীবীর এইরূপ নামকরণ (Entos =

 

অভ্যন্তর, Histos কলা, Lysis দ্রবীভূতকরণ)।

 

 

 

ভৌগোলিক বিস্তার (Geographical Distribution): -

 

 

সমগ্র পৃথিবীব্যাপী এন্টামিবার বিস্তার হলেও গ্রীষ্মমণ্ডলীয়

 

(Tropics), উপগ্রীষ্মমণ্ডলীয় (Sub-tropics) এবং

 

নাতিশীতোয় (Temperate) অঞ্চলযুক্ত দেশেও এটি

 

সমানভাবে পরিব্যপ্ত। উঃ আমেরিকা, জাপান ও কোরিয়ার

 

মতো নাতিশীতোন্ন দেশেও এই পরজীবীজনিত রোগ প্রায়

 

মহামারীরূপে পূর্বে আবির্ভূত হয়েছিল। ভারতবর্ষে এই

 

রোগের প্রাদুর্ভাব প্রবল। বস্তুতপক্ষে, নিকৃষ্টমানের ও

 

অস্বাস্থ্যকর খাদ্য ও পানীয় জলের ব্যবস্থা-সম্বলিত অঞ্চলে

 

 এই পরজীবীর ব্যাপকতা বেশি। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এই

 

পরজীবীজনিত রোগের প্রকোপ অপেক্ষাকৃত অধিক।

 

 

প্রাণীজগতে এন্টামিবার অবস্থান (Systematic Position of Entamoeba):

 

Sub-Kingdom (উপরাজ্য)-Protozoa

 

Phylum (পর্ব)-Sarcomastigophora

 

Sub-phylum (উপপর্ব)-Sarcodina

 

Super class (অধিশ্রেণি)-Rhizopoda

 

Class (শ্রেণি)- Lobosea

 

Genus (গণ)-Entamoeba

 

Species (প্রজাতি)-histolytica

 

স্বভাব ও বাসস্থান (Habit and Habitat):

 

 

 এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা মানুষের বৃহদন্ত্রের উপর অংশে

 

শ্লৈষ্মিক বা মিউকাস (mucous) এবং অধঃশ্লৈষ্মিক বা

 

সাবমিউকাস (Submucous) স্তরে অন্তঃপরজীবীরূপে বসবাস

 

করে। এটি অস্ত্রের শ্লেষ্মাকোশ ও লোহিতকণিকা খাদ্যরূপে

 

গ্রহণ করে। ফলে, বৃহদন্ত্রে তীব্র ক্ষত (ulcers) সৃষ্টি হয়

 

এবং দীর্ঘকালীন আক্রমণে আমাশয় রোগ (Amoebiasis

 

or Amoebic dysentry) সৃষ্টি করে। বহু ক্ষেত্রে, এন্টামিবা

 

অস্ত্রের প্রাচীর বিদীর্ণ করে অস্ত্র-মধ্যস্থ কলায় প্রবেশ করে

 

 এবং সেখান থেকে রক্ত-সংবহনের মাধ্যমে যকৃৎ, ফুসফুস,

 

প্লিহা, মস্তিষ্ক প্রভৃতি অঙ্গে আসে। এই অঙ্গগুলির কোশকলা

 

ভক্ষণ করে এবং স্ফোটক (abscesses) সৃষ্টি করে এবং

 

যকৃৎ বা ফুসফুসের আমাশয় (Hepatic amoebiasis,

 

Plumonary amoebiasis বা Brain abscess) প্রভৃতি রোগের

 

সৃষ্টি হয়।

 

এন্টামিবার গঠন (Structure of Entamoeba histolytica):

 

 এন্টামিবার গঠন অ্যামিবার মতো, নিশ্চিত নির্দিষ্ট

আকৃতির (shape) বিবরণ দেওয়া কঠিন, ক্ষণপদ বর্তমান।

মানুষের কোলনের গহবরে (lumen) এন্টামিবার দুটি

 

প্রকারের গঠন দেখা যায় মাইনুটা ফর্ম (Minuta form)

 

এবং ম্যাগনা ফর্ম (Magna form)ক্ষুদ্র আকৃতির মাইনুটা

 

ফর্ম বৃহদন্ত্রের গহবরে বাস করে। কোলন প্রাচীরের কলা

 

RBC ভক্ষণ করে না, কলা-আবর্জনা (Tissue debris),

 

ব্যাকটেরিয়া ও অবশিষ্ট খাদ্যাংশ ভক্ষণ করে। এরা রোগ

 

সৃষ্টি করে না (non-pathogenic)অন্যদিকে, ম্যাগমা ফর্ম

 

অপেক্ষাকৃত বৃহৎ আগাজ কোলন প্রাচীর বিদীর্ণ করে ওই

 

স্থানের কোশকলা ও RBC ভক্ষণ করে এবং রোগ সৃষ্টি

 

করে (pathogenic)এন্টামিবার জীবন-চক্রে (Life

 

 

cycle) তিনটি দশা উপস্থিত। যথা, ট্রফোজয়েট দশা

 

(Trophozoite stage), প্রি-ি দশা (Pro-cystic stage) এবং

 

সিস্টিক দশা (Cystic stage)প্রতিটি দশার গঠন ভিন্ন।

 

ফোজয়েট দশার গঠন (Structure of Trophozoite)

 

 

(i)                     আকার ও আয়তন (Shape and size): পূর্ণগঠিত,

 

প্রাপ্তবয়স্ক, সক্রিয়, খাদ্যগ্রহণকারী পরজীবীর দশাকে

 

টুফোজার বলে। এন্টামিবার ট্রফোজয়েট দশার

 

আকার (shape) অ্যামিবার মতো অনিয়তাকার।

 

 প্রায় গোলাকার ট্রফোজয়েটের ব্যাস 40 µm, দেহ

 

স্বচ্ছ।

 

এন্টামিবার ক্ষুদ্র জাতিটির (Minuta race) ট্রফোজয়েটের

 

ব্যাস 12-15 µm এবং বৃহৎ জাতিটির (Magna ra

 

ট্রফোজয়েটের ব্যাস 18-40 µmদেহে একটি অগ্রদিকে

 

প্রক্ষিপ্ত ক্ষণপদ (Pseudopodium) থাকে। ট্রফোজয়েটে প্র

 

 এক্টোপ্লাজম ও দানাদার এন্ডোপ্লাজম বর্তমান। সংকোচী

 

গহবর (Contractile vacuole) থাকে না। টুফোজয়েট দ্বি-

 

বিভাজ দ্বারা বংশ-বিস্তার করে।

 

(ii)                  সাইটোপ্লাজম (Cytoplasm):

 

 ট্রফো-জয়েটের কোশদেহের ভিতরে সাইটোপ্লাজমে পূর্ণ

 

এবং কোশদেহটি স্বচ্ছ, পাতলা, স্থিতিস্থাপক প্লাজমা আবরণী

 

দ্বারা বেষ্টিত থাকে। সাইটোপ্লাজম দুটি অংশে বিভক্ত,

 

পরিধির দিকে বিস্তৃত স্বচ্ছ এক্টোপ্লাজম এবং কেন্দ্রীয় অংশে

 

অবস্থিত ঘন, দানাদার এন্ডোপ্লাজম (Endoplasm)

 

এন্টামিবার কোশদেহের সামনের এক্টোপ্লাজম প্রসারিত হয়ে

 

 একটিমাত্র প্রশস্ত। অর্ধগোলাকার ক্ষণপদ

 

(Pseudopodium) তৈরি করে এবং এই ক্ষণপদের সাহায্যে

 

এন্টামিবা সরলরেখায় লাইম্যাক্স শামুকের মতো গমন

 

করে। একটিমাত্র ক্ষণপদ থাকার জন্য এন্টামিবাকে একপদী

 

 পরজীবী বলে। ট্রফোজয়েটের এন্ডোপ্লাজমে নিউক্লিয়াস

 

একাধিক খাদ্যগহবর (Food vacuole), পোষকের RBC,

 

ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্য থাকে। এন্টামিবা

 

হিস্টোলাইটিকা পোষকের অস্ত্রের কলার দ্বারা নিজ

 

পুষ্টিলাভের শোষণ করে। পরিবর্তে, এটি প্রতিনিয়ত

 

সক্রিয়ভাবে পোষকের কোশ ও কলা

 

 

 

(iii) নিউক্লিয়াস (Nucleus):

এন্ডোপ্লাজমের কিঞ্চিত পার্শ্বদেশে একটি গোলাকার, 4-5 µm

 

ব্যাস-বিশিষ্ট নিউক্লিয়াস বর্তমান। নিউক্লিয়াসটি একটি

 

 পাতলা নিউক্লিও আবরণী (Nuclear membrane) দ্বারা

 

পরিবেষ্টিত থাকে। এটির অভ্যন্তরে পরিধি বরাবর

 

ক্রোমাটিন দানা (Chromatin granules) সজ্জিত থাকে এবং

 

নিউক্লিয়াসের কেন্দ্রস্থলে একটি গোলাকার ক্রোমাটিনযুক্ত

 

এন্ডোসোম বা ক্যারিওসোম (Endosome বা Karyosome)

 

বর্তমান। ক্যারিও সোমের চারপাশে একটি যথ অস্পষ্ট

 

বলয় বা হ্যালো (halo) দেখা যায়।

 

প্রি-সিস্টিক দশার গঠন (Structure of Pre-cystic stage) :

 

ট্রফোজয়েট দশা দ্বি-বিভাজন দ্বারা বহু ক্ষুদ্র আকারে

 

অপত্য এন্টামিবা (amoebuli) সৃষ্টি করে। এদের অধিকাংশ

 

পোষকের অস্ত্রের রক্ত ভক্ষণ করে বাজনা ও হয়ে

 

উফোজয়েট দশা প্রাপ্ত হয়। কিন্তু অনেক অপত্য অ্যামিবুলি

 

বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হওয়ার পরিবর্তে ক্ষুদ্র আকার অবস্থায় থেকে যায়

 

এবং অস্ত্রের গহবরে ফিরে আসে। এদের আকার ক্ষুদ্র,

 

ডিম্বাকার বা গোলাকার দেহ, এদের ব্যাস (diameter) 10-

 

20 µmকোশদেহের পরিরি থেকে একটি ভোঁতা (blunt)

 

ক্ষণপদ (Pseudopodium) সৃষ্টি হয়। এন্ডো (diameter)

 

10-20 µmকোশদের থাকে না। খাদ্যগহবর থাকে না,

 

কিন্তু সঞ্চিত খাদ্যবস্তু গ্লাইকোজেন রূপে এন্ডোপ্লাজমে

 

বর্তমান। এদের নিউক্লিয়াস ট্রফোজয়েটের মতো।

 

এই দশা পোষকের অস্ত্র-প্রাচীর ভেদ করে না, অস্ত্র-গহ্বরেই

 

থাকে এবং রোগ সৃষ্টি করে না। ক্ষুদ্র, গোলাকার, মন্থর

 

গতি সম্পন্ন, অ-রোগজনক এই দশাটিকে প্রিসিস্টিক (Pre-

 

cystic stage) দশা বলে। এদের মাইনুটা (Minuta) দশাও

বলে।

 

 সিস্টিক দশা (Cystic Stage) :

 

 ট্রফোজয়েট দশা পরিবর্তিত হয়ে প্রথমে গোলাকার প্রি-

 

সিস্টিক দশা এবং পরে সিস্টিক দশাপ্রাপ্ত হয়। প্রি-সিস্টিক

 

দশার পরিবর্তনের সময় একটি স্বচ্ছ পাতলা আবরণী দ্বারা

বেষ্টিত হয়। সিস্ট-প্রাচীর (Cyst wall) পরিবেষ্টিত

দশাটিকেই সিস্টিক দশা (Cystic stage) বলে। এর ক্ষণপদ

 

থাকে না। খাদ্যগহ্বর অনুপস্থিত। আকৃতি গোলাকার এবং

 

বৃহৎ জাতির (Magna form) ব্যাস 10 µm-র বেশি।

 

বৃহদাকার সিস্ট-এর ব্যাস 12-15 µm এবং ক্ষুদ্র জাতির

 

(Minuta form) সিস্টের ব্যাস 10 µm-র কম, 6-9 µm-

 

ব্যাসবিশিষ্ট। প্রথম অবস্থায় সিস্টের সাইটোপ্লাজমে একটি

 

নিউক্লিয়াস থাকে এবং সেটি ট্রফোজয়েটের অনুরূপ। কিন্তু,

 

পরিণতির সঙ্গে সঙ্গে নিউক্লিয়াসটি দ্বি-বিভাজন দ্বারা

 

প্রথমে দুটি এবং পরে চারটি নিউক্লিয়াস গঠন করে।

 

নিউক্লিয়াসগুলির ব্যাস 2 µmপ্রতিটি সিস্টের মধ্যে একটি

 

 

বা দুটি দণ্ড বা বার-আকৃতির ক্রোমাটয়েড বডি

 

(Chromatoid bodies) দেখা যায়। সিস্টের প্রথম অবস্থায়

 

সাইটোপ্লাজমে গ্লাইকোজেন বস্তু (Glycogen bodies) উপস্থিত

 

থাকে। পরিণত সিস্টে ক্রোমাটয়েড বার এবং গ্লাইকোজেন

 

গহ্বর অবলুপ্ত হয়। সিস্ট দশার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল সিস্ট

 

আবরণী এবং চারটি নিউক্লিয়াস। সিস্টগুলি পোষকের

 

মলের সঙ্গে বাইরে নির্গত হয়। সিস্ট দশা মানবদেহে

 

সংক্রামক দশা (infective stage)সিস্টগুলি কম

 

তাপমাত্রায় 5-6 সপ্তাহ, ঘরের তাপমাত্রায় এক সপ্তাহ বেঁচে

 

থাকে কিন্তু 50°C বা তার বেশি তাপমাত্রায় সিস্টগুলি মরে

 

যায়। এন্টামিবার সিস্ট শুষ্কতা-নিরোধক এবং কয়েকটি

 

অ্যাসিডের ক্রিয়া-নিরোধক।

 

জীবন ইতিহাস (Life History):

 

 

পোষকের অস্ত্রের গহ্বরে একটি পূর্ণ ঘটিত সিস্ট মাত্র দুই

 

দিন বেঁচে থাকতে পারে এবং সিস্টের পরিস্ফুরণের জন্য

 

নতুন মানব পোষকের প্রয়োজন হয়। এই পরজীবীর

 

বংশবৃদ্ধি কেবলমাত্র ট্রফোজয়েট দশায় ঘটে থাকে। চারটি

 

নিউক্লিয়াসবিশিষ্ট সিস্ট (Tetranucleate cyst) মানুষের

 

মলের সঙ্গে বাইরে নির্গত হয় এবং অস্ত্রের বাইরে বেশ

 

কিছুদিন সক্রিয় থাকে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এবং মুক্ত

 

পয়ঃপ্রণালী-বিশিষ্ট স্থানে, মাছি, আরশোলা বা খাদ্য

 

প্রস্তুতকারক অন্য মানুষের দ্বারা খাদ্য ও পানীয় জল এই

 

সিস্টগুলির দ্বারা সংক্রামিত হয় এবং নতুন মানব পোষকে

 

প্রবেশ করে এবং মানুষের ক্ষুদ্রান্ত্রের নীচের অংশে পৌঁছায়।

 

সিস্টগুলির আবরণী-প্রাচীর পাকস্থলীর পাচকরস (gastric

 

juice) দ্বারা দ্রবীভূত হয় না, কিন্তু অস্ত্রের ট্রিপসিন

 

উৎসেচক সিস্ট-আবরণীকে দ্রবীভূত করে।

 

 

এক্সসিস্টেশন (Excystation) পদ্ধতি দ্বারা সিস্টের প্রাচীরের

 

একটি ক্ষুদ্র ছিদ্র দ্বারা টেট্রানিউক্লিয়েট এন্টামিবা বাইরে

 

বেরিয়ে আসে। এই চারটি নিউক্লিয়াস যুক্ত অ্যামিবাকে

 

মেটাসিস্টিক দশা (Metacystic stage) বলে।

 

 

 

প্রতিটি মেটাসিস্টিক দশা একবার দ্বিভাজিত হয় এবং এর

 

নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম বিভাজন দ্বারা আটটি অপত্য

 

এন্টামিবা বা অ্যামিবুলি (Amoebulae) গঠন করে।

 

প্রতিটি অ্যামিবুলায় (Amaebula) একটি করে নিউক্লিয়াস

থাকে। এদের মেটাসিস্টিক ট্রফোজয়েট (Metacystic

 

Trophozoite) বলে। এরা অস্ত্র-প্রাচীরের কলা ও রক্ত

 

শোষণ করে আকারে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে ট্রফোজয়েট গঠন

করে।

 

 

ট্রফোজয়েট দশা বেশ কিছুদিন অতিক্রান্তের পর, বেশ কিছু

 

সংখ্যক ট্রফোজয়েট কোনো কারণে অস্ত্রের প্রাকার থেকে

 

বিচ্ছিন্ন হয়ে অস্ত্রের গহ্বরে আসে এবং এনসিস্টেশন

 

(Encystation) পদ্ধতির মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে

 

নিজেদের চতুর্দিকে আবরণ তৈরি করে প্রি-সিস্টিক দশা

 

প্রাপ্ত হয়। এদের মাইনুটা দশাও বলে।

 

 

 

এনসিস্টমেন্ট দশায় নিউক্লিয়াসটি দুবার বিভাজিত হয়ে

 

মোট চারটি নিউক্লিয়াস গঠন করে। এই চারটি

 

নিউক্লিয়াসযুক্ত প্রাপ্ত দশাকে সিষ্ট বলে। এই সিস্ট (Cyst)

 

মলের সঙ্গে বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়ে খাদ্য ও পানীয় দ্বারা

নতুন পোষককে সংক্রামিত করে।

 

পুষ্টি (Nutrition):

 

 

এন্টামিবার পুষ্টিকে হলোজোয়িক (Holozoic) বলা হয়।

 

কারণ, এরা খাদ্যহিসেবে প্রধানত রক্তকণিকা এবং

 

ব্যাকটেরিয়া ভক্ষণ করে। ম্যাককাউলের (McCaul, 1976)

 

এন্টামিবার পরাণুবীক্ষণিক গঠনের গবেষণা থেকে জানা

 

যায় যে, খাদ্যগ্রহণ আচরণকালে প্রথম পরজীবীটি পোষকের

 

আন্ত্রিক কোশগুলি অ্যামিবিক বিষের (amoebic toxin)

 

প্রয়োগে সম্ভবত অস্ত্রের কোশপর্দার উপর ক্রিয়া করে, এদের

 

নির্জীব করে তোলে। পরে, এন্টামিবার সাইটোপ্লাজমের এক

 

বৃহৎ ফাগোসাইটিক নালি (Phagocytic channel) মাধ্যমে

 

বরাবর অস্ত্রের কোশ বা সংলগ্ন রক্তকণিকা গলাধঃকরণ

হয়।

 

 

ওয়েস্টফ্যালের (Westphall) মতে, এন্টামিবা পিনোসাইটোসিস

 

পদ্ধতিতে রক্ত ও কলা ভক্ষণ করে।

 

জনন (Reproduction):

 

 

এন্টামিবার ট্রফোজয়েট দশা মাইটোসিস পদ্ধতিতে

 

বংশবিস্তার করে। জনন সাধারণত দ্বি-বিভাজন (Binary

 

fission) এবং পরিমিত মাইটোসিস (Restricted Mitosis)

 

পদ্ধতিতে ঘটে থাকে। বিজ্ঞানী কফয়েড ও সুইঝি

 

(Kofoid and Swezy) এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকার 6টি

 

ক্রোমোজোম আছে বলে বর্ণনা দেন।

 

জীবনচক্র (Life Cycle):

 

 জীবনের বিভিন্ন দশা চক্রাকারে আবর্তিত হয়।

 

এন্টামিবার জীবনচক্রে দুটি প্রধান দশা ও একটি অন্তর্বর্তী

 

দশা বর্তমান। টুফোজয়েট ও সিস্ট এই দুটি প্রধান দশা

 

এবং প্রি-সিস্ট দশাটি প্রধান দুটি দশার অন্তর্বর্তী দশা।

 

এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকার জীবনচক্র কেবল একটিমাত্র

 

পোষকদেহে (মানুষ) সম্পূর্ণ হয় বলে এবং এই পরজীবীর

 

কোনো অন্তর্বর্তী পোষক (intermediate host) থাকে না

 

বলে এন্টামিবাকে মোনোজেনেটিক পরজীবী (monogenetic

 

parasite) বলে।

 

 

ট্রফোজয়েট দশা এনসিস্টেশন (Encystation) পদ্ধতিতে

 

সিস্ট দশায় পরিণত হয় এবং সিস্ট দশা এক্সসিস্টেশন

 

(Excystation) পদ্ধতিতে ট্রফোজয়েট দশায় রূপান্তরিত

 

হয়।/

 

চারটি নিউক্লিয়াসযুক্ত (tetranucleate) সিস্ট দশাটি এই

পরজীবীর সংক্রামক দশা (infective stage)এন্টামিবা

 

হিস্টোলাইটিকা আক্রান্ত মানুষের মলের সঙ্গে এই সিস্ট

 

নির্গত হয়। খাদ্য ও পানীয় জলের মাধ্যমে এই সিস্ট

 

নতুন পোষকে প্রবেশ করে।

 

 এক্সসিস্টেশন (Excystation) :

 

 

সিস্ট নতুন পোষকে খাদ্যমাধ্যমে গৃহীত হওয়ার পর

 

মানুষের অস্ত্রে প্রবেশ করে এবং অস্ত্রের উৎসেচক ট্রিপসিন

 

দ্বারা সিস্টের আবরণী-প্রাচীর দ্রবীভূত হওয়ার সময় থেকে

 

এক্সসিস্টেশন পদ্ধতি শুরু হয়। এই সময় সিস্টের প্রাচীরে

 

একটি ক্ষুদ্র ছিদ্রের মাধ্যমে টেট্রানিউক্লিয়েট এন্টামিবা

 

পরজীবীটি ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে থাকে। সিস্টের

 

প্রোটোপ্লাজমে অ্যামিবয়েড চলন হতে থাকে এবং অবশেষে

 

চারটি নিউক্লিয়াস-যুক্ত দেহটি সিস্টের বাইরে আসে। এই

 

দশাটিকে মেটাসিস্টিক দশা (Metacystic stage) বলে। এই

 

দশার নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম দ্বি-বিভাজন প্রক্রিয়ায়

 

(Binary fission) বিভাজিত হয়ে ৪টি অপত্য অ্যামিবুলি

 

(Amoebulae) গঠন করে। প্রতিটি অ্যামিবুলায় একটি

 

করে নিউক্লিয়াস থাকে। অপত্য অ্যামিবুলি খুবই সক্রিয় ও

 

চলনশীল হয় এবং বৃহদন্ত্রের সাব-মিউকাস স্তরে প্রবেশ

 

করে অবস্থান করে এবং এই স্থানের কলা ও রক্তকণিকা

 

ভক্ষণ করে বৃদ্ধি পায়। এই দশাটিকে মেটাসিস্টিক

 

ট্রফোজয়েট(Metacystic Trophozoite) বলে। মেটাসিস্টিক

 

ট্রফোজয়েট অচিরেই বৃদ্ধি পেয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রাপ্তি হয়ে

 

ট্রফোজয়েট দশায় (Trophozoite) পরিণত হয় এবং ক্রমশ

 

অন্ত্রের প্রাচীরে প্রবেশ করে ও ক্ষত সৃষ্টি করে। এদের

 

রোগজনক (Pathogenic) ক্ষতিকর দশা বলে। কিন্তু কিছু

 

কিছু অ্যামিবুলি সামান্য বৃদ্ধির পরও ক্ষুদ্রাকৃতি থেকে যায়,

 

এদের মাইনুটা দশা বলে। এরা অস্ত্রের প্রাচীর ভেদ করে

 

অবস্থান করে না, অন্ত্রের গহ্বরে থেকে ব্যাকটেরিয়া ও

 

পোষকের পাচিত খাদ্যাংশ ভক্ষণ করে এবং কোনো রোগ

 

সৃষ্টি করে না (non-pathogenic)পূর্ণাঙ্গ ট্রফোজয়েট দ্বি-

 

বিভাজন প্রক্রিয়ায় ক্রমাগত বিভাজিত হয়ে নতুন অপত্যের

 

জন্ম দেয়।

 

এনসিস্টেশন (Encystation) :

 

 

 ট্রফোজয়েটগুলি কিছু কিছু সংখ্যায় ক্রমান্বয়ে বৃহদন্ত্রের

 

সাব-মিউকাস স্তর থেকে বেরিয়ে বৃহদন্ত্রের গহ্বরে এসে

 

অবস্থান করে এবং এই সময় থেকে এনসিস্টেশন প্রক্রিয়া

 

শুরু হয়। এন্টামিবার দেহটি ক্রমশ গোলাকার হয় এবং

 

দেহটি একটি প্রতিসরণক্ষম (refractile), পাতলা ও তাপ

 

এবং শুষ্কতা-নিরোধক পর্দা দ্বারা ক্রমশ বেষ্টিত হয়।

 

নিউক্লিয়াসটি পরপর দু-বার বিভাজিত হয়ে 4টি

 

নিউক্লিয়াস সৃষ্টি করে। প্রাচীর পরিবেষ্টিত চারটি

 

নিউক্লিয়াসযুক্ত পরজীবীটির এই দশাকে সিস্ট (Cyst) বলে।

 

 

 সংক্রমণ প্রকৃতি (Mode of Infection):

 

 

এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা আক্রান্ত মানুষের মলের সঙ্গে

 

সিস্টার দেহের বাইরে নির্গত হয়। এই মল যদি পানীয়

 

জল বা খাদ্যদ্রব্য অথবা শাকসবজির সংস্পর্শে আসে তখন

 

এই প্রবক্ত সংক্রামিত হয়। খাদ্য প্রস্তুতকারী অথবা

 

খাদ্যদ্রব্য বহনকারী মানুষ যদি এই সংক্রামিত দ্রব্যগুলি

 

এমনভাবে ব্যবহার করে যাতে ভাদের আঙুল ও না-কাটা

 

বড়ো নখগুলির মধ্যে সিস্টগুলি থাকে, তবে এরাই সংক্রমণ

 

বিস্তারণের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে ওয়ে সংক্রামিত জল পান

 

করলে অথবা সংক্রামিত শাকসবজি অধসেদ্ধ অথবা কাঁচা

 

অবস্থায় খেলে সিস্টগুলি মুখগহবরে প্রবেশ করে এবং

 

সেখান থেকে অস্ত্রে আসে। অনেকক্ষেত্রে, আরশোলা, মাছি

 

এমনকি পিঁপড়েও সিস্ট বহন করে।

 

 

 রোগ লক্ষণ (Pathogenicity):

 

 

এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা মানুষের সকল অঙ্গে পরজীবীরূপে

অবস্থানে সক্ষম যদিও কোলন (Colon) হল সংক্রমণের

 

প্রাথমিক স্থান। সংক্রমণ বিস্তারের দ্বিতীয় পর্যায়ে অন্যান্য

 

অঙ্গ, যথা- যকৃৎ, কুসফুস মস্তিষ্ক, ত্বক, চক্ষু, মুত্রথলি, জরায়ু ও

 

ভ্যাজাইনাতে সংক্রমণ দেখা যায়।

 

 

এই পরজীবীর আক্রমণে প্রাথমিক পর্যায়ে আমাশয় বা

 

অ্যামিবিক আমাশয় (Amoebic dysentery) বা

 

অ্যামিবিয়েসিস (Amoebiasis) ও রক্ত আমাশয় রোগ দেখা

 

যায়। দীর্ঘদিন E.histolylica-র আক্রমণে এই পরজীবী

 

সংবহন দ্বারা বরং ফুসফুস, প্লিহা, মস্তিষ্ক প্রভৃতি অঙ্গে প্রবেশ

 

করে এই সকল স্থানের কোশকলা বিনষ্ট করে এবং এর

 

ফলে স্ফোটক অ্যাবসেস (abscess)-এর সৃষ্টি হয়।

 

প্যাথোজেনেসিস (Pathogenesis):

 

 

রোগ-লক্ষণ বিভিন্ন অঙ্গে বিভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। যথা-

 

আস্তিক আমাশয় (Intestinal amoebiasis) : এন্টামিবার

 

আক্রমণ শুরু হয় প্রাথমিক অবস্থায় কোলনে (Colon)

 

এবং এই অঞ্চলে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়া স্বল্প-অক্সিজেন-

 

টান (low oxygen tension) অবস্থা সৃষ্টি করে যা

 

আক্রমণকারী এন্টামিবার এই অঞ্চলে বসবাসের পক্ষে

 

সহায়ক হয়। ল্যাকটিন নামের এক গ্লাইকোপ্রোটিন

 

এন্টামিবাকে অস্ত্রের অন্তর্গাত্রে অবস্থিত মাইক্রোভিলাই-এর

 

সঙ্গে দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত হতে সাহায্য করে। এই সময়

 

ট্রফোজয়েটগুলির কোশপর্দা থেকে নিঃসৃত উৎসেচক অস্ত্র-

 

প্রাচীরের কোলাজেন তত্ত্বকে ধীরে ধীরে দ্রবীভূত করে।

 

আক্রান্ত মিউকোসা থেকে তখন প্রচুর মিউকাস নির্গত হয়

 

পরজীবীর অন্তঃগ্রন্থি এপিথেলিয়ামে প্রবেশের ফলে। আক্রান্ত

 

কোশগুলি বিনষ্ট হতে থাকে এবং ওই স্থানে একটি ক্ষত

 

সৃষ্টি (ulcer) হয়। ক্ষতস্থান থেকে রক্ত, মিউকাস প্রভৃতি

 

নির্গত হয়ে অস্ত্র-গহ্বরে সঞ্চিত হয় এবং আমাশয় রোগ

 

সৃষ্টি করে। ক্ষত ক্রমশ প্রসারিত হয়ে অস্ত্রের প্রাচীরে ছিদ্র

 

 

তৈরি করে। এর ফলে পেটে যন্ত্রণা, বমিভাব, জ্বর এবং রক্ত

 

ও শ্লেষ্মা-মিশ্রিত মল ত্যাগ বারবার হতে থাকে। অস্ত্রের

 

ক্ষত থেকে অস্ত্রের ছিদ্র সৃষ্টি হয় এবং অস্ত্রের ক্ষত

 

প্রধানত উর্ধ্বগামী কোলন (ascending colon), সিকাম

 

এবং রেকটামেও সৃষ্টি হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত

 

অঞ্চলগুলিতে ঈষৎ ফোলা (oedema হয় ও শ্বেতকণিকা

 

প্রবিষ্ট হতে থাকে। পরবর্তী পর্যায়ে ক্ষতস্থানে ব্যাকটেরিয়ার

 

আক্রমণ হতে থাকে এবং সেই সময় এন্টামিব পোর্টাল

 

শিরায় প্রবেশ করে যকৃতে পৌঁছায় ও আক্রমণ প্রসারিত

 

হতে থাকে অন্যান্য অঙ্গে।

 

যকৃতে আমাশয় (Hepatic amoebiasis) :

 

 

 এন্টামিবার ট্রফোজয়েট দ্বারা যকৃৎ কোশ আক্রান্ত হয়

 

এবং কোশগুলি বিনষ্ট হয়ে যকৃতের স্থানে স্থানে ক্ষত ও

 

স্ফোটক (liver abscess) সৃষ্টি হয়। অ্যাবসেসগুলি এক বা

 

একাধিক হরে পারে। এর ফলে জ্বর, জন্ডিস, তীব্র যন্ত্রণা,

 

উদরাময়, আমাশয়, কাশি, শরীরের ওজন হ্রাস, যকৃতের বৃদ্ধি

 

ইত্যাদি রোগ-লঙ্গ দেখা দেয়।

 

 

 

ফুসফুস, প্লিহা, মস্তিষ্কের অ্যাবসেস ৪ এই সকল অঙ্গে যখন

 

রক্তসংবহন মাধ্যমে পরজীবী প্রবিষ্ট হয় ও এইস্থানের

 

 

 

কোশ-কলা ভক্ষণ করে অধিষ্ঠিত হয়, তখন এই

 

অঙ্গগুলিতে ক্ষত, ব্যাপক ক্ষতি ও স্ফোটক বা অ্যাবসেস

 

গঠিত হয়। ফরে মাথা ব্যথা, জ্বর, কাশির সঙ্গে শ্লেষ্মা

 

নির্গমন ও ব্যথা-যন্ত্রণার মত রোগ-লক্ষণ প্রকাশ পায়।

 

 

 

 

এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকাকৃত রোগের নিদানিক বৈশিষ্ট্য (Clinical Features of the Pathogenesis of E. histolytica):

 

(i)                     আন্ত্রিক অ্যামিবিয়েসিস (Intestinal amoebiasis) :

 

রোগ-উপসর্গগুলির মধ্যে উদরাময় (diarrhoea),

 

জ্বর আমাশয় (dysentery), পেট ব্যথা

 

(abdominal pain) ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পায়।

 

 

(ii)                  যকৃতের অ্যামিবিয়েসিস (Hepatic amoebiasis) :

 

উপসর্গের (symptoms) মধ্যে উদরাময়, আমাশয়, যন্ত্রণা,

 

 কাশি, দেহের ওজন হ্রাস, যকৃতের আকার বৃদ্ধি, জন্ডিস,

 

জ্বর, ইন্টারকস্টাল ও এপিগ্যাসট্রিক পেশির ব্যথা ইত্যাদি।

 

(iii)                সেরিব্রাল অ্যামিবিয়েসিস (Cerebral amoebiasis):

 

অ্যাবসেস বিদীর্ণ হয়ে সেরিবেলাম আক্রান্ত হয়, অস্তিম পর্যায়ে মৃত্যু হয়।

 

(iv)                প্লুরা-ফুসফুস অ্যামিবিয়েসিস (Pleuro-pulmonary amoebiasis): যকৃতের অ্যাবসেস বৃদ্ধি পাওয়ার পর পরজীবী প্লুরা-গহ্বর এবং ফুসফুস আক্রমণ করে। বুকের ব্যথা, কাশি, জ্বর ও কাঁধের ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ লক্ষণীয়।

 

(v) ত্বকীয় অ্যামিবিয়েসিস (Cutaneous amoebiasis) : অস্ত্রের ছিদ্র ও স্ফোটকের (abscess) বিদারণের ফলে ত্বক আক্রান্ত হতে পারে। দুর্ঘটনাজনিত ক্ষত সৃষ্টির ফলে পেরিনিয়ামে পরবর্তী পর্যায়ে এন্টামিবার প্রসার ঘটে, এর ফলে ডার্মিসের গভীরে প্রদাহ হয় এবং এর উপবৃদ্ধি ত্বকের ক্যানসার হবার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে।

 

(vi) প্লিহার অ্যামিবিয়েসিস (Spleenic amoebiasis) :কোলন (Colon) থেকে সরাসরি এন্টামিবা প্লিহায় প্রবিষ্ট হয়।

(vii) জনন-মূত্র অ্যামিবিয়েসিস (Genito-urinary amoebiasis) : যকৃৎ অথবা ফুসফুসের অ্যাবসেস বিদারণের ফলে এন্টামিবা বৃক্কে আক্রমণ করে অথবা এই স্থানের রোগ-বিস্তার লসিকা নালি মাধ্যমেও হয়। জনন অঙ্গে আক্রান্ত হয় বিদারিত অ্যাবসেস থেকে।

রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসা (Prevention, Control and Treatment):

1. এই রোগের সম্ভাব্য ক্ষতিসমূহের দিকে জনগণের সচেতনতা।

 

2. উত্তম ব্যবস্থাপূর্ণ পয়ঃপ্রণালীর ব্যবহার।

 

3.সংক্রামিত অঞ্চল থেকে গৃহীত শাকসবজি ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য সুষ্ঠুভাবে পরিষ্কার ও ধোয়া এবং কাঁচা বা অর্ধসেদ্ধ শাকসবজি গ্রহণ না করা।

 

4.সংক্রামিত অঞ্চলের পানীয় জল ফুটিয়ে গ্রহণ করা। এতে 10 মিনিটের মধ্যে সিস্ট মারা যায়।

 

5. অনাবৃত আঙুলের ত্বকে সিস্ট আনীত হলে শুষ্ক হয়ে যায় এবং শীঘ্রই মারা যায়, কিন্তু নখের তলায় আশ্রয়ে থাকলে এই সিস্ট প্রায় 45 মিনিট জীবিত থাকে। সেই কারণে সংক্রামিত অঞ্চলের জনগণের নিজ স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সতর্ক এবং সচেতন থাকা প্রয়োজন।

 

6.সিস্ট যেহেতু প্রায় ক্লোরিন-নিরোধক, ক্লোরিন দ্বারা পানীয় জল শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়াকালে, বিশেষ সাবধানতা প্রয়োজন

 

জলের উন্নতা ও pH বিষয়। খোলা মাটিতে সিস্ট প্রায় ৪-30 দিন বেঁচে থাকতে পারে যদি পরিবেশের তাপমাত্রা সাধারণ মাত্রায় থাকে।

 

 চিকিৎসা (Treatment): সাধারণভাবে অ্যামিবোসাইডসের (amoebocides) প্রয়োগ।

 

(a) মেট্রোনিডাজোল ও নিরিডাজোল (Metronidazole and Niridazole) প্রয়োগ অস্ত্রের গহ্বরের ও কলার সিস্ট ও ট্রফোজয়েটের ওপর ক্রিয়া করে ও বিনষ্ট করে।

 

(b) ডায়োডোকুইন (Diodoquin), ক্লায়োকুইন (Clioquin), মেবিনল (Mebinol), EBI ইত্যাদি ওষুধ প্রয়োগ অস্ত্রের গহ্বরের টুফোজয়েট ও সিস্ট-এর ওপর ক্রিয়া করে এবং বিনষ্ট করে।

 

(c) কলা-মধ্যস্থ টুফোজয়েটের ওপর এমিটিন (Emetine) খুবই কার্যকরী ড্রাগ। যকৃৎ ও ফুসফুসের অ্যাবসিসের ক্ষেত্রে ক্লোরোকুইন (Chloroquine) কার্যকরী।






নোট : লেখার মাধ্যমে ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা প্রার্থী।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *