Bengali version
বুক
জ্বালা/অম্লরোগ (Acidty/Heartburn)
সুস্থ ব্যক্তিদের পাকস্থলীতে প্রয়োজনীয় মাত্রায় অ্যাসিড বা অম্ল ক্ষরিত হয় যা
ভুক্ত খাদ্যদ্রব্য হজমে সাহায্য করে। যখন এই অ্যাসিড (Hydrochlorie acid) প্রয়োজনের বেশি মাত্রায় প্রবিত হয় তখন সেই অবস্থাকে অম্লরোগ বা অ্যাসিডিটি বলা
হয়।
বুক জ্বালা/হৃদদাহ (Heartburn)-এটি পাকস্থলীর কোনো রোগের একটি লক্ষণ বিশেষ, কোনো স্বতন্ত্র রোগ নয়। এতে বুকের মাঝামাঝি দাহ হয় বা জ্বালা করে। এই জ্বালা
অধিজঠর (Epigastrium) থেকে শুরু হয়ে গলা অবধি অনুভূত হয়। এতে রোগীর
মুখ টক জলে ভরে ওঠে এবং গলায় বার বার জ্বালা করে।
কারণ
১. মানসিক চিন্তা এবং সব কাজে তাড়াহুড়ো।
২. লঙ্কা-মশলাযুক্ত
খাবার, আচার
প্রভৃতি খাওয়া।
৩. রাতে ভাজা ও
অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার খেয়ে একটু হাঁটাচলা না করেই শুয়ে
৪. দীর্ঘমেয়াদি
খাদ্যনালি প্রদাহ (Chronic esophagitis) ও জঠারাগম হার্নিয়া (hiatus hernia)
৫. সময় মতো না খাওয়া।
৬. অত্যধিক মদ্যপান ও
ধূমপান করা।
৭. খৈনি,
পান, গুটকা প্রভৃতি খাওয়া।
৮. গর্ভাবস্থায়
সাধারণত অ্যাসিডিটি ও হাদদাহ দেখা দিয়ে থাকে।
লক্ষণ
ও উপসর্গ
১. বুকের মাঝামাঝি
জ্বালা করে।
২. টক ঢেকুর ওঠে।
৩. মুখে তেতো ও টক জল
ভরে যায়।
৪. গরম পানীয় বা ভাজা
খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বুক জ্বালা শুরু হয়ে যায়। এ খাবার কিছুক্ষণপরেই রোগী
বুক জ্বালা ও পেট ভার (পেট ফাঁপা) অনুভব করে।
৫. রোগীর
স্বাভাবিকভাবেই খিদে পায়।
৬. গুরুতর অম্লরোগে
গলা জ্বালা করে।
৭. অস্বস্তির দরুন
রোগী নির্বিঘ্নে বসে থাকতেও পারে না।
৮. রোগী ভয়েতে কিছু
খেতে চায় না আর না খেলে অ্যাসিডিটি আরও ক্ষতি করে
রোগ নির্ণয়ঃ-উপরোক্ত
লক্ষণ ও উপসর্গ দেখে সহজেইরোগ নির্ণয় করা যায়।
চিকিৎসা
১. রোগীকে তার উদ্বেগ
ও দুশ্চিন্তা দূর করতে হবে।
২. কোনো প্রকার
সংক্রমণ হলে তার চিকিৎসা করতে হবে বা যে করবে হহৃদদাহ/অ্যাসিডিটি দেখা দিচ্ছে তার
চিকিৎসা করতে হবে।
৩. যে সব জিনিস খেলে
অ্যাসিডিটি হয় সেগুলি না খাওয়াই ভাল।
৪. মদ্যপান ও ধূমপান
থেকে একেবারেই দূরে থাকতে হবে।
৫. হালকা পুষ্টিকর
খাবার বার বার একটু একটু করে খেতে হবে।
৬. পেটের ওপর গরম সেক
দেওয়া যেতে পারে।
ঔষধোপচার
১. রোগীকে শুরু থেকেই
অ্যান্টাসিড (Antacids) দিতে
হবে। অ্যান্টাসিড নেওয়ার পর সাধারণত জ্বালা কমে যায়। তাছাড়া লক্ষণানুযায়ী রোগীর
চিকিৎসা করা হয়।
২. বমি হলে Metoclopromide
ইঞ্জেকশন বা ট্যাবলেট দেওয়া হয়।
৩. যদি রোগীর কোনো
প্রকার সংক্রমণ হয়ে থাকে তাহলে Antibiotics দিতে হবে।
৪. ক্ষয়কারক/ক্ষতকারক
বিষণে (Corrosive poisoning) শুরুতেই Antidote বা
৫. প্রতিবিষ দেওয়া
উচিত যাতে শ্লৈষ্মিক ঝিল্লির ক্ষতি কম হয়।
৬. রোগীকে H,
receptor Antagonist ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে
দেওযা যেতে পারে।
H receptor Antagonist-এর ইঞ্জেকশন নেওয়ার পর রোগীর অবস্থা কিছুটা ভাল হলে তাকে Ranitidine
বা Famotidine-এর ট্যাবলেট সকালে ও বিকালে দেওয়া যেতে পারে।
আজকাল অম্লরোগে
অপারেশনের প্রয়োজন হয়না বললেই চলে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন