নিউক্লিয় বল (Nuclear forces)
যে বিশেষ বলের প্রভাবে নিউক্লিয়াসের অতিক্ষুদ্র পরিসরে (r≃ 10-13
cm) পরাধর্মী প্রোটন ও তড়িৎ-প্রশম নিউট্রন কণিকাসমূহ পরস্পরের
প্রতি আকৃষ্ট হয়ে একত্রে আস্থান করে তাকে নিউক্লিয় বল বলে।
নিউক্লিয় বলের মেসন তত্ত্ব (Meson theory of nuclear forces):
জাপানি পদার্থবিজ্ঞানী ইউকাওয়া-এর (H. Yukawa, 1935) মতে,
নিউক্লিয়াসের অতি ক্ষুদ্র পরিসরে পাই-মেসন ( π-meson) নামক
অতি ক্ষুদ্র কণিকার অবিরাম আদানপ্রদানের মাধ্যমে দুটি
নিউক্লিয়নের মধ্যে তীব্র আকর্ষণজনিত বলের উদ্ভব হয়। একেই
বলে নিউক্লিয় বল। ধনাত্মক, ঋণাত্মক এবং প্রশম-এই তিন প্রকার
মেসন কণিকা আছে।
① নিউট্রন এবং প্রোটনের মধ্যে পজিটিভ পাই-মেসন ( π+) ও
নেগেটিভ পাই-মেসনের ( π-) বিনিময় ঘটে।
p ⇆ n + π+ ; n ⇆ p + π-
② দুটি নিউট্রন অথবা দুটি প্রোটনের মধ্যে প্রশম পাই-মেসনের (π0)
বিনিময় ঘটে।
P ⇆ p + π0 ; n ⇆ n + π0
১.নিউট্রন-নিউট্রন (-n), প্রোটন-প্রোটন (p-p) এবং প্রোটন-নিউট্রন (p-
n)-এর পারস্পরিক আকর্ষণজনিত বল
থেকে এই বলের উদ্ভব হয়।
২.এই বল অতিক্ষুদ্র পরিসর (≈ 2.5 × 10-13 cm)-এর মধ্যে ক্রিয়া
করে এবং তার বাইরে কার্যকরী হয় না।
৩. নিউক্লিয় বল সৃষ্টিকারী n-n, p-p এবং p-n এই তিন প্রকার
আকর্ষণজনিত বলের মান সমান। এগুলির মান সংশ্লিষ্ট কণাগুলির
আধানের উপর নির্ভরশীল
নয়।
৪. দুটি নিউক্লিয়নের মধ্যে ক্রিয়াশীল এরূপ আকর্ষণ বল দ্বারা
নিকটবর্তী অন্য কোনো কণিকা আকৃষ্ট হয় না।
৫. নিউক্লিয় বল, মহাকর্ষ বল বা কুলম্বীয় প্রকৃতির নয়।
৬. এই বল মহাকর্ষ বল (gravitational force) অপেক্ষা 1030 গুণ
শক্তিশালী এবং কুলম্বীয় বল (Coulombic force)
অপেক্ষা 100 গুণেরও বেশি শক্তিশালী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন