কিউ ফিভার ('Q' Fever)
এক
নজরে কিউ ফিভার : রোগ ছড়ায় গরু-
ছাগল-ভেড়া এবং তাদের থেকে উৎপাদিত পণ্য
সামগ্রী।
অনেক সময় সংক্রমণ পরীক্ষাগারের প্রাণী থেকে
আসে।
(ক) তীব্র অথবা একঘেয়ে বা পুরনো জ্বরের (Acute or
Chronic febrile illness)
সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গ, যেমন-মাথা
ব্যথা,
কাশি, অবসাদ,
পেটে ব্যথা। (খ) প্রশারণশীল ফুসফুস প্রদাহ, যকৃৎ
প্রদাহ,
মস্তিষ্ক বিকার। খুব কমই হৃদ অন্তরাস্তর
প্রদাহ (Endocarditis) দেখা
যায়।
আলোচনা : নিউজিল্যান্ড
ছাড়া পৃথিবীর প্রায় সব দেশে
কিউ ফিভার দেখা যায়।
রোগের কারণ : -
রিকেট্সিয়া Coxiella burnetii; রোগটির
বিশেষত্ব হচ্ছে এই
রোগ সন্ধিপদ প্রাণীর (Arthropoda) মারফৎ
ছড়ায় না।
ছড়ায় রিকেট ট্রিক্সয়া খেলে বা নিঃশ্বাসের
সঙ্গে গ্রহণ
করলে। রোগটির বেশি আক্রমণ দেখা যায় গবাদি পশু,
ছাগল-ভেড়ায়। রোগটি ওই পশুদের মধ্যে অবনিদানিক
ভাবে (Mild or subclinical disease) থাকে।
কী ভাবে রোগ ছড়ায়: রোগটি রুগ্ন
গরু-ছাগল-ভেড়ার মল-মূত্র, মাংস, অন্যান্য
বর্জ্য পদার্থ ও কোষকলা (Tissue) ইত্যাদি
থেকে ছড়ায়।
এসব প্রাণীদের শুকনো পায়খানায় অজস্র
রিকেট্সিয়া থাকে
এবং তারা ধুলোর মাধ্যমে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ও
খাবারের
মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করে।
আসন্ন প্রসবা বিড়াল কখনও কখনও এই রোগের
মহামারি
সৃষ্টি করে। প্রাণী চিকিৎসক, কসাইখানার
ব্যক্তি এবং যারা
প্রাণী নিয়ে নাড়াচাড়া তারা ঝুঁকির মধ্যে
থাকে।
রোগের সংক্রমণ অনুসারে নিদানিক লক্ষণ দেখা
যায়।
হৃদ অন্তরাস্তর প্রদাহ Coxiella burnetti সংক্রমণের
একটি
বিরল ঘটনা কিন্তু রোগটি প্রকাশ পেলে মারাত্মক
অবস্থার
সৃষ্টি হয় এবং এটির সঙ্গে অনাক্রম্যতা
সমঝোতার
(Immuno compromising conditions) যোগাযোগ
আছে
বলে অনুমান করা হয়।
কক্সিয়েল্লা রিকোট্সিয়া তাপ এবং শুষ্কতা
প্রতিরোধে সক্ষম
কারণ সে অন্তঃবীজগুটি (Endospore) সৃষ্টি
করতে পারে।
তাই কক্সিয়েল্লা ধূলো-চামড়ায় ভালোভাবে বাঁচতে
পারে।
মায়ের থেকে তৃণে রোগ ছড়াতে পারে।
সুপ্তিকাল (Incubation Period): ১-৩
সপ্তাহ।
লক্ষণ
ও উপসর্গ
জুর-অবসাদ-মাথা ব্যথা-পেশিশূল-শুকনো কাশি, কখনো
দেখা যায় ফুসফুস প্রদাহ। রোগ মারাত্মক হলে
ক্ষতাঙ্কুর
সম্বলিত যকৃৎ প্রদাহ (Granulomatous
hepatitis) দেখা
দিতে পারে কদাচিত কিন্তু মারাত্মক হয় হৃদ
অন্তরাস্তর
প্রদাহ (Endocarditis) আর
সেটা দেখা যায় মহাধমনির
আগে থেকে থাকা কপাটিকার রোগ অথবা অনাক্রম্যতা
দমনের (Immunosuppression) জন্য।
অন্যান্য উপসর্গ: মস্তিষ্ক প্রদাহ-রক্তাল্পতা
(লসিকানাশক)
অন্ডকোষ প্রদাহ তীব্র বৃক্ক ক্রিয়া বৈকল্য
বক্ষ ভেদক
লসিকাগ্রন্থি বিকার (Mediastinal
lymphadenopathy)
নিদানিক লক্ষণ পুরনো বা তীব্র হতে পারে। রোগ
লক্ষণ
ঘুরে ফিরে আসতে পারে।
পরীক্ষাগরের রিপোর্টঃ (১) যকৃতের কাজ বেড়ে
যেতে
দেখা যায়, (২)
কখনো শ্বেতকণিকাধিক্য, (৩) প্রতিরক্ষী
(Antibodies) বেড়ে
যেতে দেখা যায় Complement-
Fixing Antibodies পরীক্ষায়।
প্রতিবিম্ব: এক্স-রে চিত্রে দেখা যায় ফুসফুসে
চাপড়া-চাপড়া অনুপ্রবেশ (Patchy Pulmohary infiltrates)।
তুলনামূলক রোগ নির্ণয়ঃ তুলনা করতে হবে (১)
ভাইরাস-মাইকোপ্লাজমা এবং জীবাণু ঘটিত ফুসফুস
প্রদাহের সঙ্গে।
(২) ভাইরাস ঘটিত যকৃৎ
প্রদাহ-ব্রুসেল্লোসিস-যক্ষ্মা-
সিটাকোসিস্ এবং অন্যান্য রোগ যা পশু থেকে
মানুষে
সংক্রামিত হয়।
(৩) রোগীর পশুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, কসাই
খানার কাজ,
রক্তমস্ত পরীক্ষা (Serological test) যথাযথ
পথ দেখাবে।
(৪) জ্বরের নির্দিষ্ট কোনো কারণ না থাকা, রক্ত
কালচারে
কিছু ধরা না পড়া, এবং
হৃদ বা তঞ্চাভিবাসন রোগ
(Embolic or Cardiac disease) সহজেই
কিউ ফিভারের
কথা মনে করিয়ে দেবে, বিশেষ
করে অনাক্রম্যতা
সমঝোতাকারী (Immunosuppres- sion) রোগীর
বেলায়।
প্রতিরোধ
(১) গরু-ছাগল-ভেড়া যাদের থেকে রোগ ছড়াচ্ছে বলে
সন্দেহ হবে, তাদেরই
সরিয়ে দিতে হবে অথবা তাদের
সংস্পর্শ এড়াতে হবে, (২)
পানীয় দুধ ভালো ভাবে
পাস্তুরীকৃত বা গরম করতে হবে। (৩) টিকা নিতে
হবে
সুবিধা থাকলে।
(১) Tetracycline ২৫
মি.গ্রা./ কেজিতে/দিনে/ সমস্ত
মাত্রাকে সমান ৪ ভাগে ভাগ করে দিনে ৪ বার
খেতে
হবে। অথবা Doxycycline ১০০
মি.গ্রা / দিনে দুবার
খেলে রোগ লক্ষণ বা উপসর্গমুক্ত হওয়া যায়
কিন্তু
সংক্রমণ হঠিয়ে দেওয়া যায়-না। তিন দিন', ধরে
চিকিৎসা চলবে। হৃদ অন্তরাস্তর প্রদাহ না হলে
মৃত্যুর হার খুবই কম।
Tetracycline গণের বাণিজ্যিক নামের ওষুধ, কোং-র
নাম
রিকোসিয়া রোগের প্রসঙ্গে
বলা হয়েছে।
https://amzn.to/4g99rbJ
হৃদ অন্তরাস্তর প্রদাহের চিকিৎস অনেকদিন ধরে, দরকার
পড়লে কয়েক বছর পর্যন্ত চালাতে হবে: Doxycycline (২০০
মি.গ্রা/দিনে) ব্যবহার করা যায়। Doxycycline গণের
বাণিজ্যিক নামের ওষুধ, কোং-র
নাম রিকেটসিয়া
চিকিৎসার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে।
https://amzn.to/4dK2lsy
দরকার পড়লে হৃদপিন্ডের কপাটিকার পরিবর্তন (Heart
valves replacement) করাতে
হবে।
নোট: এই আর্টিকেল টি কেবল মাত্র আপনাদের নলেজের জন্য লিখা
হয়েছে ।দয়া করে কেউ নিজে চেষ্টা করবেন না ।কোন অসুবিধা বা রোগ আক্রান্ত হলে দয়া
করে কোন ডক্টর এর সঙ্গে পরামর্শ নিন।
নোট : লেখার মাধ্যমে ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা প্রার্থী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন